cropped-Black-White-Minimalist-Business-Logo.jpg
Nuhash Polli নুহাশ পল্লী গাজীপুর

নুহাশ পল্লী (Nuhash Polli) বাংলাদেশের কথা সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের স্বপ্নের বাগানবাড়ি। যেখানে দেখার মত রয়েছে অনেক কিছু। গাছ গাছালিতে ভরপুর সুন্দর স্নিগ্ধপূর্ন একটি স্থান নুহাশ পল্লী। যেখানে প্রায়ই বিভিন্ন স্থানের বিভিন্ন জেলার মানুষদের আগমন ঘটে। এমনকি নুহাশ পল্লী প্রাকৃতিক নৈসর্গ হিসেবে খ্যাত। তাই আপনি যদি এবারের নতুন বছরে কোথাও টুর দেওয়ার চিন্তা করেন, তাহলে উপযুক্ত স্থান হতে পারে এটি।  

তো আসুন আজকের এই আলোচনার মাধ্যমে জেনে নেই– নুহাশ পল্লীতে দেখার মত কি কি আছে, নুহাশ পল্লী কেন এত জনপ্রিয়, নুহাশ পল্লীর প্রধান আকর্ষণ কি, নুহাশ পল্লী কিভাবে যাবেন, নুহাশ পল্লী ভ্রমণ খরচ কত, টিকিট মূল্য এবং সময়সূচী কি ইত্যাদি যাবতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি সম্পর্কে।

নুহাশ পল্লী (Nuhash Polli) | নুহাশ পল্লীর প্রধান আকর্ষণ

বাংলাদেশী কথাসাহিত্যে হুমায়ূন আহমেদ ব্যক্তিগতভাবে নিজের একটি সুন্দর বাগানবাড়ি স্থাপন করেন। এটি মূলত ঢাকার অদূরে গাজীপুরে অবস্থিত। এই পল্লীটি মোট ৪০ বিঘা জমির উপর নির্মিত। যেখানে দেখার মত রয়েছে দারুণ কিছু। 

অনেকটাই আশ্চর্যের মনে হতে পারে। তবে এটাই সত্যি যে নুহাশ পল্লীতে রয়েছে আড়াইশো প্রজাতির দুর্লভ ফলজ, বনোজ, মসলা জাতীয় এবং দুর্লভ ঔষধি গাছ। এমনকি প্রত্যেকটি গাছের পরিচিতি। যার মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই নতুন নতুন গাছ দেখতে পারবেন এবং ওই গাছের নাম জানতে পারবেন এবং গাছগুলো সম্পর্কে আপনার ধারণা তৈরি হবে। 

এছাড়াও নুহাশ পল্লীর প্রধান আকর্ষণ হচ্ছে গাছের উপরে ঘর। সেখানে সবুজ মাঠের মাঝখানে রয়েছে একটি বিশাল বড় গাছ। আর সেই গাছের ওপরে রয়েছে ছোট্ট ছোট্ট ঘর। নুহাশ পল্লীর উদ্যানের পূর্ব পার্শে রয়েছে খেজুরের বাগান। শুধু তাই নয়, সেখানে আরো একটি আকর্ষণ হচ্ছে লীলাবতী দীঘি ও বৃষ্টি বিলাস নামের এক বাড়ি। আরো রয়েছে পুকুরের মাঝখানে উদীয়মান একটি ছোট্ট দ্বীপ এবং সারিসারি নারকেল গাছ। 

পাশাপাশি নুহাশ পল্লীতে আরো দেখা যাবে কথা সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের  মূর্তি ও সমাধিস্থল। সেই সাথে পদ্ম পুকুর, পাথরের মৎস্যকন্যা, এবরো-থেবড় সুইমিং পুল, টি হাউস সহ এমন অনেক দৃষ্টিনন্দন সব স্থাপনা। এছাড়াও নুহাশ পল্লীতে দেখার মত রয়েছে তিন তিনটি বাংলো। যেগুলোর নাম ভূত-বিলাস বৃষ্টি বিলাস।

নুহাশ পল্লীতে (Nuhash Polli) যাতায়াত মাধ্যম | কিভাবে যাবেন নুহাশ পল্লী

যে কোন স্থান ভ্রমণের পূর্বে অবশ্যই ওই স্থানে যাওয়ার মাধ্যম, থাকা খাওয়ার সুযোগ সুবিধা ইত্যাদি যাবতীয় বিষয়গুলো জানার প্রয়োজন পড়ে। নুহাশ পল্লী যেহেতু বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় ভ্রমণ স্থান হিসেবে মানুষের মুখে মুখে পরিচিতি লাভ করেছে, তাই সেখানে খাওয়ার ভালোই সুযোগ-সুবিধা থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। 

কিন্তু কথা হচ্ছে আপনি নুহাশ পল্লী পৌঁছবেন কিভাবে? নুহাশ পল্লী যাওয়ার উপায় কি এবং পৌঁছানোর ভাড়ার খরচ কত? এটা মূলত আপনি কোন জেলায় বাস করছেন তার ওপর অনেকটাই নির্ভর করবে। আমরা মূলত এ পর্যায়ে ঢাকা থেকে নুহাশ পল্লী যাওয়ার উপায়, টিকিট মূল্য, সম্পূর্ণ ভ্রমণ খরচ সম্পর্কিত বিষয়ে ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব।

নুহাশ পল্লীতে আপনি ঢাকা থেকে পৌঁছাতে পারবেন বাসে করে। গুলিস্তান থেকে ঢাকা পরিবহনের বাস যেটা কাপাসিয়া তে পৌঁছায় এবং প্রভাতী বনশ্রীর বাস যেটা বর্মী যায়, মূলত এই বাসে চেপে আপনি নুহাশ পল্লীর উদ্দেশ্যে রওনা হতে পারেন। অতঃপর হোতা-পারা নামক একটি স্থানে নেমে সিএনজি কিংবা রিক্সায় সরাসরি পৌঁছাতে পারবেন আপনার সেই গন্তব্যস্থলে। 

নুহাশ পল্লীর টিকিট মূল্য

নুহাশ পল্লীতে (Nuhash Polli) আপনি চাইলে বিনা টিকিটেও প্রবেশ করতে পারবেন। অতএব মানে এটা দ্বারা হচ্ছে টিকিট ছাড়াও নুহাশ পল্লী ভ্রমণ করা যায়। তবে এর একই নির্দিষ্ট দিন বা তারিখ রয়েছে। সাধারণত বছরের দুই দিন অর্থাৎ 13 ই নভেম্বর ও 19 শে জুলাই নুহাশ পল্লী সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকে। এর একটি বিশেষ কারণ রয়েছে। কারণটা যদি আপনি গেস করতে পারেন তাহলে কমেন্ট সেকশনে জানিয়ে দিন। কেননা এই কারণটি আমাদের সকলেরই জানা, প্রয়োজন শুধু একটু ভাবনার। 

আর হ্যাঁ, এই দুইদিন বাদে যদি নুহাশ পল্লী ভ্রমণ করতে চান তাহলে জনপ্রতি টিকিটের মূল্য ২০০ টাকা পরিশোধ করতে হবে। অতএব নুহাশ পল্লীর টিকিট মূল্য হচ্ছে ২০০ টাকা।

নুহাশ পল্লী ভ্রমণের উপযুক্ত সময় | নুহাশ পল্লী ভ্রমণের সময়সূচি

এপ্রিল থেকে নভেম্বর পর্যন্ত নুহাশ পল্লী সকল দর্শনার্থীদের জন্য সপ্তাহে সাত দিন খোলা থাকে। অতএব সেখানে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বন্ধন নেই। সকাল ঠিক আটটা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত সর্বদা খোলা থাকে নুহাশ পল্লীর দরজা। অতএব আপনি দিনের যেকোনো সময় পৌঁছাতে পারেন সেখানে এমনকি বছরের যে কোন সময়। তবে চেষ্টা করবেন এপ্রিল থেকে নভেম্বর মাসের মধ্যে সেখানে যাওয়ার। 

থাকবেন কোথায়?

নুহাশ পল্লীতে থাকার মত কোন ব্যবস্থা নেই। অতএব আপনি নুহাশ পল্লীর ভিতরে রাত্রি যাপন করতে পারবেন না। তবে বৃষ্টি বিলাস নামের বাংলাতে বিশ্রাম নেওয়ার সুব্যবস্থা রয়েছে। আর আপনি যদি সেখানের ভূত-বিলাস নামের বাংলাতে সময় কাটাতে ইচ্ছুক হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে খরচ করতে হবে প্রায় তিন হাজার থেকে 5000 টাকা। 

খাবেন কোথায়?

নুহাশ পল্লী (Nuhash Polli) হচ্ছে একটি সুন্দর মনমুগ্ধকর বাগান বাড়ি। এখানে মূলত আপনি একটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমন্ডিত নিরিবিলি স্থান উপভোগের জন্য যেতে পারবেন। সেখানে গিয়ে আপনি বিভিন্ন নামিদামি দেশি-বিদেশি খাবার খাওয়ার সুবিধা কি পাবেন না। তবে নুহাশ পল্লীর ভিতরে খাওয়ার ব্যবস্থা না থাকলেও বাইরে কিছু ঝুপড়ি দোকান রয়েছে। সেখান থেকে আপনি ভালো মানের শুকনো খাবার খেতে পারবেন। 

তবে আপনি যদি আপনার পছন্দ মত খাবার খেতে চান সেক্ষেত্রে ব্যবস্থাটা আপনাকেই করতে হবে। অতএব নুহাশ পল্লীতে গিয়ে ভালো মন্দ খাওয়ার ইচ্ছা পূরণের জন্য খাবার সঙ্গে করে নিয়ে যাওয়াটাই সর্বোত্তম। আর যদি সেটা না করেন তাহলে দুপুরে বাড়ি খাওয়ার খাওয়ার জন্য হোতাপাড়া বাজারে যেতে হবে আপনাকে। 

নুহাশ পল্লী সম্পর্কিত প্রশ্ন ও তার উত্তর

১. নুহাশ পল্লী কোথায় অবস্থিত?

উত্তরঃ পল্লী গাজীপুরে অবস্থিত।

২. নুহাশ পল্লী কত বিঘা জমির উপর নির্মিত?

উত্তরঃ নুহাশ পল্লী ৪০ বিঘা জমির উপর নির্মিত।

৩. নুহাশ পল্লী কিভাবে যাব?

উত্তরঃ নুহাশ পল্লী যদি আপনি ঢাকা থেকে যেতে চান সেক্ষেত্রে বাসে করে যেতে পারবেন। আর যদি অন্য কোন জেলার বাসিন্দা হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে বাস-ট্রেন অটো রিক্সার সমন্বয়ে পৌঁছানো সম্ভব হবে। এক কথায় নুহাশ পল্লীতে সড়কপথে পৌছাতে পারবেন। 

৪. নুহাশ পল্লীতে পিকনিকের জন্য কত খরচ পড়বে?

উত্তরঃ নুহাশ পল্লীতে পিকনিকের জন্য একটি গ্রুপে সর্বোচ্চ ৩০০ জন যেতে পারে। সরকারি ছুটির দিনে যদি পিকনিকে যাওয়া হয় সেক্ষেত্রে খরচ হবে মোটামুটি ৬০ হাজার টাকা অন্যদিকে যদি সরকারি ছুটির দিন বাদে যাওয়া হয় তাহলে খরচ হবে ৫০০০০ টাকা। 

 

নতুন দর্শনীয় স্থান